ছবি ঘর | নির্মাণ তথ্য | খাবার | কৃষি | পড়াশোনা | প্রযুক্তি | দেশ | ইসলাম | লগইন

স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কখন কোন খাবার খাবেন

স্বাস্থ্য সকল সুখের মূল। আসলে সুস্থতা ছাড়াও স্বাস্থ্যের আরেকটি অর্থ হচ্ছে সুখ। রোগ হলে সুখ চলে যায়, তাই রোগকে বলা হয় অসুখ। অসুখ যাতে না হয়, কিংবা হলেও কীভাবে ভাল হওয়া যায় এবং ভাল থাকা যায়, তা জানা ও মেনে চলা খুব দরকারী। বিশেষ করে তোমাদের মতো অল্প বয়সে। তা হলে সহজে তোমাদের অসুখ হবে না এবং নিরোগ দেহে দীর্ঘ জীবন লাভ করতে পারবে। স্বাস্থ্য রক্ষার নিয়ম ভালো করে জানার আগে একটা কথা মনে রাখবে, শরীর ও মন একসাথে জড়িত। কাজেই দুটোকেই গুরুত্ব দিতে হবে। শরীরকে যদি যন্ত্রের সাথে তুলনা কর তাহলে দেখবে যন্ত্রের যেমন তেল, গ্যাস কিংবা বিদ্যুৎ দরকার হয়, শরীরেরও তেমনি দরকার খাদ্য, পানীয় ও বাতাস। বাতাস দূষণমুক্ত হলেই চলে, কিন্তু খাদ্য ও পানীয় নিয়ে অনেক কিছু ভাবার আছে।

প্রথম কথা, আমরা বাঁচার জন্য খাই না খাওয়ার জন্য বাঁচি? পেটুক বা খাদকশ্রা অবশ্য বিশ্বাস করে খাওয়ার জন্য বাঁচা উচিত, তবে বেশীর ভাগ মানুষ মনে করে আমরা বাঁচার জন্য খাই। এটাই সত্য। খাওয়ার নিয়ম হচ্ছে ঠিক সময়ে ভালো মানের খাবার ও পানীয় উপযুক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা। পেট কখনও বেশী ভরতে নেই, তাতে হজমের গণ্ডগোল হয়। প্রতিদিন একই সময়ে খাওয়া উচিত। রাতের খাওয়া আটটার মধ্যে সেরে ফেলা ভালো, কারণ বিকেল থেকে হজম শক্তি কমতে থাকে।

এবার দেখা যাক কী খেতে হবে। সহজে হজম হয় এমন খাবারই সব সময়ে খাওয়া উচিত। এতে হজমশক্তির ওপর বেশী চাপ পড়ে না বলে পেট খারাপ হয় না এবং খাবার থেকে পুষ্টি ভালভাবে শরীরে যোগ হয়।

অতিরিক্ত তেল, চর্বি, লবণ ও মশলাযুক্ত এবং ভাজা পোড়া খাবার একেবারেই খাওয়া উচিত নয়। এতে জিনিশেরও অপচয়, স্বাস্থ্যও নষ্ট হয়।

খাবারের একটি উপকারী উপাদান হচ্ছে আঁশ যা অন্তর পরিষ্কার রাখে বলে সহজে পেটের ক্যান্সার হয় না। ক্যান্সার খুব মারাত্মক রোগ। খাবার বেশী ঘষে-মেজে কিংবা রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে সাদা, মসৃণ ও উপাদেয় করা হলে আঁশ চলে যায়। এ রকম খাবারকে মৃত খাদ্য বলা হয়। ময়দা ও সাদা চিনি মৃত খাদ্য। এগুলো দিয়ে তৈরী খাবার না খাওয়াই ভাল। কারণ ময়দায় যেমন ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে, তেমনি চিনি আমাদের হাড় পর্যন্ত ক্ষয় করে।

কিন্তু এটা ঠিক যে মিষ্টি জিনিশ খেতে মজা। কাজেই মিষ্টি কিছু খেতে হলে চিনি ছাড়া অন্য কোন উৎসের সন্ধান করা যেতে পারে। যেমন গুড় কিংবা মধু অল্প পরিমাণে খাওয়া চলে। সবচেয়ে ভালো হচ্ছে মিষ্টি ফলমূল। চিনির তৈরী পানীয় দ্রব্যও খারাপ। বিশেষ করে কোলাজাতীয় পানীয়গুলো। সেইসাথে ময়দা, তেল, মাখন ইত্যাদি দিয়ে তৈরী নানারকম মজাদার খাবার যেমন পরোটা, পাউরুটি, বিস্কুট, চিপস, নুডলস, সেমাই, কেইক, পেস্ট, প্যাটিস, চানাচুর, বার্গার ও বিভিন্ন ফাস্ট ফুড খাওয়ার অভ্যাস মারাত্মক সব রোগ, যেমন হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, বহুমূত্র বা ডায়াবিটিসের জন্ম দিচ্ছে। এশিয়ায় অল্পবয়েসীদের মধ্যে বহুমূত্র রোগের হার অনেক বেড়েছে এবং বেড়েই চলেছে শুধু এ কারণে।

মানুষ অভ্যাসের দাস। কাজেই সুস্বাদু অথচ খারাপ খাবার খাওয়া একটু কষ্ট করে ছেড়ে দিয়ে ভাল খাবার প্রথম প্রথম একটু কম স্বাদ লাগলেও খেয়ে অভ্যাস করা উচিত। অখাদ্য খাওয়ার অভ্যাস না করলে কষ্ট করে সে অভ্যাস বাদও দিতে হয় না। ধূমপান ও বিভিন্ন মাদকদ্রব্যের নেশার বেলায়ও এ কথা খাটে।

শতকরা হিসেবে খাবারের ৪০ ভাগ শ্বেতসার অর্থাৎ ভাত-রুটি, ১৫ ভাগ আমিষ অর্থাৎ মাছ-মাংস-ডিম-ডাল এবং বাকী ৪৫ ভাগ শাক-সবজি-ফলমূল হওয়া উচিত। গরু-খাসীর মাংসে চর্বি থাকে বলে তা বিপজ্জনক এবং বেশী খেলে বড় বড় রোগ হয়। দিনে অন্তত আধা কেজি সবজি খাওয়া ভালো। নাস্তায় কাঁচা পেঁপে বেশ কিছুটা থাকতে হবে। আর থাকতে হবে যে কোনো ধরনের ফল। প্রতিদিন পাঁচ রকম ফল ও ছয় রকম সবজি খাওয়া উচিত। সবজি তিন বেলাই খাওয়া যায়। তবে শাক, সিম ও কপি জাতীয় সবজি রাতে খেলে পেটে বায়ু জমে। খাওয়ার জন্য দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে সকাল। সকালের চেয়ে দুপুর এবং দুপুরের চেয়ে রাত কম গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে এটা না জেনে নাস্তার চেয়ে দুপুরে এবং দুপুরের চেয়ে রাতে বেশী খেয়ে অসুস্থ হয়।

টাটকা খাবার থেকে বিশুদ্ধ রক্ত তৈরী হয় এবং বিশুদ্ধ রক্ত শরীরের জীবকোষগুলোকে সুস্থ রাখে। এ জন্য বাসী খাবার খাওয়া উচিত নয়। ফ্রিজেও খাবার বেশী সময় রাখলে এর গুণাগুণ ও স্বাদ নষ্ট হয়। শরীরের অধিকাংশ পানি বলে তা পূরণের জন্য দিনে ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করা উচিত। এর মধ্যে সকালে খালি পেটে ৬০০ গ্রাম (২ থেকে ৩ গ্লাস) পানি পান করার পর ৪৫ মিনিট পানাহার বন্ধ রাখলে সহজে পায়খানা হয় এবং আলসারসহ বহু জটিল রোগ সারে। ডাবের পানিও ভালো, তবে দিনে একটার বেশী নয়। দুধ-চিনি ছাড়া হালকা চা উপকারী।

উৎস ও ব্যবহারঃ-

স্বাস্থ্য বিষয়ক এই লিখাটি ইন্টারনেট ও বিভিন্ন বই থেকে তথ্য সংগ্রহ করে লিখা হয়েছে। এই লিখাটি সবার জন্যে উন্মুক্ত। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য ছাড়া যে কেউ এই লিখাটি ব্যবহার করতে পারবেন।

একই ধরনের বিষয়ঃ-

বিষয়: রোগ প্রতিরোধক খাবার ও পানীয়ের একটি তালিকা

সর্বশেষ প্রকাশিত বিষয়

বিষয়: ব্রণ কি বা কাকে বলে, ব্রণ কেন হয়, ব্রণ এর লক্ষণ কি কি?

বিষয়: মুখের ব্রণ দূর করার ঔষধ বা ঔষধের নাম

বিষয়: ব্রণ বা ব্রণের দাগ দূর করার উপায় জেনে নিন

বিষয়: খাদ্য এবং পুষ্টি উপাদান (পরিমান সহ)

বিষয়: রোগ প্রতিরোধকারী খাবারের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান

বিষয়: স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কখন কোন খাবার খাবেন

বিষয়: বিনা ওষুধে উপযুক্ত খাবারের দ্বারা রোগ নিরাময় করুন

বিষয়: রোগ প্রতিরোধক খাবার ও পানীয়ের একটি তালিকা

বিষয়: এন্টিবায়োটিক এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা ক্ষতিকর প্রভাব

বিষয়: এন্টিবায়োটিক কাজ করছে না কেন, করণীয় কি?

বিষয়: ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স কি, ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স হলে কি ক্ষতি হয়?

বিষয়: এন্টিবায়োটিক ও এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কি, রেজিস্ট্যান্স হলে করণীয়

বিষয়: ঔষধ ও এন্টিবায়োটিক সম্পর্কে কিছু তথ্য

বিষয়: ঔষধ সংরক্ষণ, ব্যবহার বিধি ও সতর্কতা